আলুর পুষ্টিগুণ
আলু সোলানেসি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত একটি কার্বোহাইড্রেট
ও কন্দযুক্ত শস্য। এর বৈজ্ঞানিক নাম সোলানাম টিউবেরোজাম। বিশ্বে উচ্চহারে অর্থাৎ সবচেয়ে
বেশি উৎপাদিত শস্যের তালিকায় আলুর স্থান চতুর্থ।
যার প্রথম তিনটি হচ্ছে যথাক্রমে- ধান, গম ও ভুট্টা।
আলুর জন্মস্থান পেরু হলেও বর্তমানে আলুর শতকরা ৯৯ ভাগই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত
হচ্ছে। ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে আলু উৎপাদিত হয়ে থাকে।
বর্তমানে আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীন প্রথম স্থান
ও ভারত দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। আলুতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদান,
যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এতে আছে ক্যারোটিনয়েড ও পলিফেনলের মতো প্রয়োজনীয়
ফাইটোকেমিক্যাল। পুষ্টিমান বিবেচনায় আলুর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এর কার্বোহাইড্রেট
উপাদান। একটি মাঝারি আকারের আলুতে রয়েছে প্রায় ২৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। আলুর কার্বোহাইড্রেট
অংশের উল্লেখযোগ্য অবস্থা হচ্ছে স্টার্চ।
আর খুব সামান্য হলেও স্টার্চের একটি বিশেষ অংশ আমাদের
শরীরে বিভিন্ন কাজে লাগে। রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ রান্নার পর শতকরা ৭ ভাগ এবং ঠান্ডা
করার পর শতকরা ১৩ ভাগে উন্নীত হয়ে থাকে।
তবে সাধারণত ছালের ঠিক ভেতরের পাতলা স্তরে আলুর বেশিরভাগ
পুষ্টি থাকে। এজন্য আলু ছোলা অর্থাৎ কাটা ও রান্নার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন,
নয়তো পুষ্টিমান কমে যেতে পারে।
প্রয়োজনীয়তা- কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালরিসমৃদ্ধ আলু
আমাদের শারীরিক শক্তির উৎস। ভিটামিন-'সি', ভিটামিন-'বি'৬, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ফাইবারে
সমৃদ্ধ থাকার কারণে আলু আমাদের শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি খুব সহজেই মেটাতে পারে।
মিষ্টি আলুতে ক্যালরি খুব কম এবং প্রায় ফ্যাট নেই
বললেই চলে। তাই যাদের ক্ষেত্রে ক্যালরি-ফ্যাটে সমস্যা তারাও আলু খেতে পারবে। আলুতে
রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, পটাশিয়াম ও ভিটামিন-'এ', যা খুবই প্রয়োজনীয়। এনার্জি বা
শক্তি উৎপাদক হিসেবে আলু খুবই নির্ভরযোগ্য একটি খাদ্য।
আলু থেকে প্রাপ্ত শক্তি লাইকোজেন হিসেবে মাংসপেশি
ও লিভারে সঞ্চিত থাকে। তাই শারীরিক ব্যয়ামের ক্ষেত্রে বিশেষ করে খেলোয়াড়দের জন্য
আলু একটি উত্তম খাদ্য। আলু কম মাত্রায় সোডিয়ামযুক্ত, প্রায় ফ্যাটমুক্ত ও সহজে হজমযোগ্য
হওয়ার কারণে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা যায়।
স্টমাক আলসার বা পাকস্থলীর ক্ষত নিরাময়ে ও কোলন
বা অন্ত্রের ফুলে যাওয়ায় আলু খুবই উপকারী। উচ্চমানের ফাইভার থাকায় হেমোরয়েড বা
অর্শ্ব রোগেও আলু খুব সাহায্য করে থাকে। উচ্চমানের ভিটামিন-'এ'-এর সমৃদ্ধতার কারণে
গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি ও এপিথেলিয়াল টিস্যুযুক্ত অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে আলু সাহায্য
করতে পারে। আলু রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য
এটি একটি উপকারী খাদ্য।
হার্ট-অ্যাটাক বা স্ট্রোক প্রতিরোধেও আলু সাহায্য
করে থাকে। পটাশিয়াম থাকার কারণে আলু আমাদের দেহ কোষে ইলেক্ট্রোলাইট ও ফ্লুইডের সমতা
নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। হার্টের স্বাভাবিক কাজকর্মে সাহায্য করার পাশাপাশি ব্লাডপ্রেসারও
নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
সুত্র- ইন্টারনেট।
Facebook Comments Plugin Bloggerized by BD WEBDESIGN
0 comments:
Post a Comment