Saturday, January 5, 2013


শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। যখন ছোট ছিলাম মামার বাড়ী বেড়াতে গেলে মামাদের সেই তালের ডিঙ্গী অথবা নৌকায় করে বের হতাম শাপলা ফুলের ফল (ঢেপ) সংগ্রহ করে খেতে। বেশ মজা লাগতো। গ্রামে গঞ্জে এখনও শাপলার তরকারী করে অনেকেই খায়।
শাপলা সাধারণত জলজ উদ্ভিদ। কান্ড মাটির নিচে থাকে যা শালুক নামে পরিচিত। এর পাতা লম্বা বোঁটাযুক্ত এবং পানির উপর ভাসমান থাকে। কান্ড থেকে লম্বা ডাটা যুক্ত ফুলের কলি বের হয়। লাল শাপলা ও সাদা শাপলা বেশী দেখা
যায়। তবে নীল রঙের ভিন্ন প্রজাতির শাপলাও পাওয়া যায়। পাতার গোঁড়ার দিক হৃদপিন্ডাকৃতির এবং পাতার কিনারা ঢেউ খেলানো। ফলগুলো স্পঞ্জের মত দেখতে এবং ফলের ভিতর অনেকগুলো কোষ। প্রতিটি কোষে সরিষার ন্যায় বীজ থাকে। সাদা শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল। শাপলার ফল দিয়ে মজাদার খই তৈরি হয়।
বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র, খাল, বিল, পুকুর, ডোবায় পাওয়া যায়। বীজ থেকেও চারা করা যায়।
শাপলার পরিচিতি-
প্রচলিত নাম- শাপলা
ইউনানী নাম- নিলুফর
আয়ুর্বেদিক নাম- নীলোৎপল
ইংরেজী নাম- Water Lily
বৈজ্ঞানিক নাম- Nymphaea nouchail Burm.F
পরিবার- Nymphaeaceae
শাপলাতে গ্যালিক এসিড ও তার বিভিন্ন যৌগ, ফ্লেভনল গ্লাইকোসাইড ও লিগনিন বিদ্যমান। সাধারণত ফুল ও রাইজোম মানবদেহের বিভিন্ন রোগে যেমন- স্নিগ্ধ কারক, শীতল কারক, পিত্ত প্রশমক, হৃদযন্ত্রের শক্তি কারক ও পিপাসা নিবারক। তাছাড়া প্রসাবের জ্বালা পোড়া, আমাশয় ও পেট ফাঁপায় উপকারী। রোগ অনুসারে নিচের পদ্ধতি অবলম্বনে অনেক উপকারে আসবে যেমন-
প্রসাবের জ্বালা পোড়া ও পিত্তাধিক্য রোগে শাপলা ফুলের শুকনো অংশ ১০-১৫ গ্রাম পাঁচ গ্রাম ধনিয়া আধা চূর্ণ করে, দুই কাপ পানিতে মিশিয়ে জ্বাল করে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মত চিনি সহ দিনে ২ বার ১৫-২০ দিন খেলে উপকার হবে।
হৃদযন্ত্রের দুর্বলতায় ও হৃদকম্পে রোগের জন্য শাপলা ফুল ১০ গ্রাম, সাথে পাঁচ গ্রাম গোলাপ ফুল মিশিয়ে দুই কাপ পানিতে জ্বাল করে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মত চিনি মিশিয়ে প্রতিদিন ২ বার এভাবে ১ মাস নিয়মিত খেলে বিশেষ উপকারে আসবে।
পিপাসা নিবারনের জন্য শাপলা ফুলের শুকনো অংশ ১০-১২ গ্রাম এক কাপ পানিতে জ্বাল করে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মত চিনি মিশিয়ে দিনে ২ বার এভাবে ১ মাস খেলে উপকার হবে।
Facebook Comments Plugin Bloggerized by BD WEBDESIGN

0 comments:

Post a Comment

  • RSS
  • Delicious
  • Digg
  • Facebook
  • Twitter
  • Linkedin
  • Youtube