অনিদ্রায় ভোগে অর্ধেক
মানুষ!
রাতে কি আপনার ঘুম কম
হচ্ছে অথবা হচ্ছেই না? ঘুম নিয়ে খুব চিন্তায় আছেন? ভাবছেন, সবাই ঘুমাচ্ছে কিন্তু আপনিই
শুধু ঘুমাতে পারছেন না? আপনার জন্য সান্ত্বনার সংবাদ হলো, ব্রিটেনের প্রায় অর্ধেক মানুষই
রাতে স্বাভাবিক পরিমাণে অর্থাৎ নিশ্চিন্তে ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন না। ফলে ঘুমের অভাবে
মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন তাঁরা। এক গবেষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকরা।
স্কটল্যান্ডের দ্য ইউনিভার্সিটি
অব গ্লাসগোর অধ্যাপক এবং স্লিপিও নামক সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা কলিন এসপাইয়ের নেতৃত্বে
একদল গবেষক ব্রিটেনের প্রাপ্তবয়স্ক ১২ হাজার ব্যক্তির ওপর এ গবেষণা চালায়।
গবেষণায় এসব ব্যক্তির
ঘুমের প্রকৃতি ও এর প্রভাব সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা চলে। এতে দেখা যায়, ৫১ শতাংশ
মানুষের চোখেমুখে নিয়মিতই ঝিমানো ভাব লেগে থাকে অর্থাৎ রাতে এসব মানুষের ভালো ঘুম হয়
না। এর মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারীরাই অধিক পরিমাণে অঘুমের যন্ত্রণা ভোগ করে থাকেন।
এই হিসেবের মধ্যে রয়েছে নারী ৭৫ শতাংশ, পুরুষ ২৫ শতাংশ।
জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটেনের
৫৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সম্পর্কজনিত সমস্যায় ভোগেন। সম্পর্কের নানা টানাপড়েনে
৭৭ শতাংশ উদাসীন বনে যান, ৬৪ শতাংশ কামকাজে পিছিয়ে পড়েন, ৮৩ শতাংশ মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত
এবং ৯৩ শতাংশ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক
কলিন বলেন, ‘অনিদ্রা
শুধু মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ক্ষতিকর প্রভাবই ফেলে না, ক্রমাগত অনিদ্রা শরীরে বড় ধরনের
অসুখের সৃষ্টিও করতে পারে।’ তিনি জানান, নিয়মিত অনিদ্রার ফলে মানসিক সমস্যা সৃষ্টির
পাশাপাশি ডায়াবেটিসের মতো অসুখও শরীরের বাসা বাঁধতে পারে। অনিদ্রা দূর করার জন্য নিয়মমাফিক
জীবনাচরণের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে তিন হাজার
প্রাপ্তবয়স্কের ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ স্বীকার করেছে রাতে তাঁরা
পরিমাণমতো ঘুমাতে পারেন না। ৫৭ শতাংশ বিছানায় শুয়ে থাকলেও কাজকর্ম ও টাকা-পয়সার দুশ্চিন্তায়
তাঁদের ঘুম আসে না বলে জানিয়েছেন।
গবেষণায় উল্লেখ করা
হয়, রাতে ১০ জনের মধ্যে একজন ই-মেইল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন,
৬ শতাংশ তাঁদের সঙ্গী কখন বাসায় ফিরবেন, তাঁর অপেক্ষায় বসে থাকেন, ২৬ শতাংশ গান-বাজনা
শোনায় মগ্ন থাকেন এবং ১৮ শতাংশ যৌনকর্মের কারণে রাত জাগেন।
আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে
দেখা গেছে, অনেক নারীই যেকোনো সমস্যার মধ্যেও নাক ডেকে ঘুমাতে পারেন। ঘুম পেলে কোনো
ধরনের সমস্যাই তাঁদের আটকাতে পারে না। এর মধ্যে ২১ শতাংশ নারী ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমিয়ে
থাকেন, যেখানে পুরুষের বেলায় তা ১৪ শতাংশ।