আমরা প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায়
বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য রাখি না। সেটা জ্ঞাতসারেও হতে পারে আবার অজ্ঞাতেও। কেউ
কেউ আবার এ ব্যাপারে খুব একটা ভাবতেও আগ্রহী হন না। আর উঠতি বয়সী বা যৌবনের এলাকাতে
বসবাসকারীরা তো আরো উদাসীন।
অনেকে নিজের অজান্তে ক্যালসিয়ামের
অভাবে ভুগছেন। আর যখন তারা ক্যালসিয়াম গ্রহণে আগ্রহী হন, তখন বেশ অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে
যায়।
দেহে ক্যালসিয়ামের কার্যকারিতা
অনেক। যেমন এটা হাড় মজবুত করে, পেশির সংকোচন এবং হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াকলাপ ঠিক রাখে,
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে, হরমোন নি:সরণ ও দেহের বিভিন্ন রকম কোষের বিভাজনে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, দেহের ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না এবং কোথাও কেটে বা
ছিঁড়ে গেলে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে; রসায়নিক দূষণ থেকে দেহকে রক্ষা
করে। ভারী ধাতুর বিষক্রিয়া থেকে দেহকে বাঁচাতে ক্যালসিয়াম অন্যতম উপাদান। বিশেষত
যাঁরা কলকারখানায় কর্মরত বা শিল্প এলাকায় বসবাস করেন। ঢাকার মতো যেসব শহরে হাওয়া
বিপুল পরিমাণ সিসা ঘুরে বেড়ায়, সেসব শহরের মানুষের নিয়মিত ক্যালসিয়াম খাওয়া প্রয়োজন;
অগ্ন্যাশয়ের বিটা শেষে ইনসুলিন ভরতে সাহায্য করে ফলে ডায়াবেটিস এবং এর কারণে চোখ,
কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ত্বকের সমস্যা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে।
দেহের ভেতরে ক্যালশিয়ামের মূল আবাস
হল হাড় ও দাঁত। একই সঙ্গে রক্তেও কিছু পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে। রক্তে ক্যালসিয়ামের
পরিমাণ নির্দিষ্ট মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত হওয়া জরুরি। কেননা, এখান থেকেই শরীরের প্রতিটি
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্যালসিয়াম বণ্টন হয়।। রক্তে ক্যালশিয়ামের মাত্রা কমে শরীরের চাহিদা
মেটাতে হাড়ে সঞ্চিত ক্যালসিয়াম রক্তে আসতে থাকে যার ফলে হাঁড় ক্ষয় শুরু হয়। রক্তে
ক্যালসিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখতে হাড় ও দাঁত মজবুত থাকে।
মেয়েদের বেশি করে ক্যালসিয়ামের
প্রয়োজন হয়। কারণ অস্থিতে ক্যালসিয়ামের সমতা বজায় রাখে হরমোন। হরমোনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার
তারতম্যের জন্য ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি বেশি করে হয়।
খনিজ পদার্থ ও কোষ-কলা অন্থির গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান। এ দু’উপাদানের উৎপত্তি এবং ক্ষয়ের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হয় হরমোন ও ভিটামিন
ডি দ্বারা।
জন্মবিরতিকরণ বড়ি ক্যালসিয়ামের
ঘাটতির কারণ হতে পারে। তাই এসব বড়ি খাবারর বড়িও নিয়মিত খেয়ে যাওয়া উচিত।
অন্থি ক্ষয় ও অন্থি তৈরির প্রক্রিয়ার
মধ্যে ভারসাম্য হানি ঘটার কারণেই অস্টিও পোরোসিসের সূত্রপাত হয়। ফলে সামান্য আঘাতেই
হাড়ে চিড় ধরা, হাড় ভাঙা থেকে শুরু করে একেবারে চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এত নি:শব্দে
এর আগমন ঘটে যে, আমরা বুঝতেই পারি না আমাদের ক্যালসিয়াম ঘাটতির কথা।
নিয়মিত বেশি পরিমাণে প্রাণিজ আমিষ
ও স্নেহ জাতীয় খাদ্য ডায়েটারি ফ্যাট। রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। প্রাণিজ
আমিষ শরীরে প্রচুর ফসফো উৎপন্ন করে যা ফলশ্র“তিতে প্রস্রাবের সঙ্গে ক্যালসিয়ামকে বের
করে দেয়। বিশেষভাবে তৈরি ও সংরক্ষণ করা খাদ্যদ্রব্য ও একই কাজ করে।
দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের কম ক্যালসিয়াম
গ্রহণ করলে শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি দেখা দিবে। স্বাভাবিকভাবে নিয়মিত সুষম খাদ্য
খেলে শরীরের ক্যালসিয়ামের চাহিদা মিটে যায়। বাইরে থেকে ক্যালসিয়াম দেবার প্রয়োজন
পড়ে না। বেড়ে উঠার সময় অর্থাৎ ১৫ বা ৩০ বছর পর্যন্ত যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম
প্রয়োজন হয়।
তবে কিডনির সমস্যা, কিডনি বা মূত্রাশয়ে
পাথর থাকলে ক্যালসিয়াম বড়ি খাবেন না।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও জনশূন্যতায় ভুগলে
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ক্যালসিয়াম খাবেন না।
ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম যৌথভাবে
কাজ করে। তাই ক্যালসিয়াম বেশি গ্রহণ করলে ম্যাগনেশিয়ামের চাহিদা বেড়ে আর এর মধ্যে
ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
Facebook Comments Plugin Bloggerized by BD WEBDESIGN
0 comments:
Post a Comment