চা আমরা সবাই কম বেশি পান করি,কিন্তু এর উপকারির কথা
জানি কি?চা নিয়ে কিছু কথা আজ শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে......আশা করি ভাল লাগবে।
চা মূলত ক্যামেলিয়া সিনেনসিন উদ্ভিদের পাতা, পর্ব
ও মুকুলের কৃষিজাত পণ্য যা বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া “চা” ...বলতে এক
ধরণের সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট পানীয়কেও বোঝানো হয়। চা’র নামকরণ করা হয় গ্রীকদেবী
‘থিয়া’ (Thea) এর নামানুসারে। এর জন্মস্থান চীনদেশে। চা’র বৈজ্ঞানিক নাম Thea
Sinensis I Camellia Sinensis। চা Theaceae পরিবারের সদস্য। চা প্রধানত ৩ ধরনের যথা-দুধ
চা,সবুজ চা ও লেবু চা।( লেবু চা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নাম এ পরিচিত)। এছাড়া ও
আর ও কিছু রকম চা আছে। আমাদের দেশ এ এগুলা জনপ্রিয় নয়।
দুধ চাঃ
ক্লান্তিতে খুবই কার্যকরী হতে পারে। তাই জানা থাকলেও
আসুন জেনে নেই কিভাবে সহজে সতেজ হওয়ার দরকারী এক কাপ চা বানানো যেতে পারে।
প্রথমে পানি গরম করতে হবে।পানি ফুটতে শুরু করলে চুলা
নিভিয়ে ফেলতে হবে।গরম পানিতে প্রয়োজন মত চা পাতা ঢেলে ৩-৪ মিনিট অপেক্ষা করুন।
এবার প্রয়োজন মত দুধ ও চিনি মিশিয়ে পান করতে পারেন।এটাই হবে শরীরকে সতেজ
(সাময়িক) করার সত্যিকারের কার্যকরী চা।
নিয়মিত চা ও কফি পানে কমে হৃদরোগের ঝুঁকি। দেখা গেছে
চা বা কফি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৫ গুণ কমিয়ে দেয়। এছাড়া
এ সময় স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়েনা বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় পাওয়া গেছে।
নেদারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের গবেষকরা এ গবেষণাটি করেন। তারা বলেন,
কফির চেয়ে চা-ই বেশি উপকারী। দিনে ৬ কাপ চা পানে করোনারি সমস্যার ঝুঁকি প্রায় ৪৫
শতাংশ কমে যায়। এদিকে দিনে ২ কাপ কফি পানের অভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি ২০ শতাংশ পর্যন্ত
কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা দুটি পানীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি
র্যাডিকেল কমিয়ে দেয়। গবেষণার ফলাফল জার্নাল অফ অ্যামেরিকান হার্ট ফাউন্ডেশনে প্রকাশিত
হয়।
খেতে পারেন গ্রিন টীঃ
গ্রীন টি -এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে৷ বিশেষ
করে স্বাস্হ্য সচেতন মানুষদের কাছে৷ আর এই চায়ের প্রতি এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েদেরও বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে ৷ বলা যায় ফিগার ঠিক রাখতে
অনেকেই এই গ্রীন টি-এর প্রতি বেশি ঝুঁকছেন৷
গ্রীন টি প্রথমে ছিলো ওষুধ তারপর পানীয়তে পরিণত হয়েছে৷ গ্রীন টির রয়েছে নানা গুণ- নিয়মিত এই
চা পানে শরীরে ভালোভাবে রক্ত চলাচল করে৷ পেট
পরিষ্কার থাকে আর মস্তিষ্ককে রাখে সচল ৷ এই চা কেবল পিপাসাই মেটায়
না দূর করে ক্লান্তি ৷ এই তথ্যগুলো বিভিন্ন গবেষণার মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে
এসেছে৷
জাপানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা দিনে দুই কাপের বেশি গ্রীন টি পান করেন তারা
মানসিকভাবে অনেক বেশি ফিট৷ গবেশক্রা একথাও বলেছেন যে যারা শারিরিক এবং মানসিকভাবে ফিট
তাদের জন্য গ্রীন টি বেশি উপকারে আসে৷ গ্রীন টি
ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে৷ তবে এই চা নিয়মিত পান করতে হবে৷ এতে রয়েছে
ভিটামিন এ, ই , সি , ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন মিনারেল যা প্রতিটি
মানুষের শরীরেই প্রয়োজন ৷ স্বাস্হ্য ঠিক রাখতে সাহায্য তো করেই এমনকি নিয়মিত এই চা পান মানুষের আয়ু বাড়াতেও ভূমিকা
রাখে৷ গ্রীন টি তৈরি করতে কেতলীতে কতটুকু পাতা দিতে হবে৷ ফুটন্ত পানির টেম্পারেচার
কত হবে, চায়ের পাতা কতক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে এসব নিয়মাবলী চায়ের প্যাকেটের
গায়ে লেখা থাকে বা সাথে দেয়া হয় নিয়মাবলী
পুস্তিকা ৷ উন্নতমানের এই ব্যয়বহুল চা শুধুমাত্র
সৌখিন মানুষদের পক্ষেই পান করা সম্ভব৷ তবে
সাধারণ মানের গ্রীন টি আজকাল প্রায় প্রতিটি
সুপার মার্কেটেই পাওয়া যায়৷নিয়মিত গ্রীন টি পানে মানুষের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কিছুটা
কমিয়ে দেয়৷
সবুজ চা পাতার আরও কিছু উপকারিতা:
১. কিডনি রোগের জন্য উপকারী।
২. হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
৩. পোকামাকড় কামড়ালে যদি ওই স্থান চুলকায় ও ফুলে
যায় তাহলে সবুজ চায়ের পাতা দিয়ে ঢেকে দিলে আরাম বোধ হয়।
৪. রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়।
৫. ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।
৬. এর লিকার দাঁতের য়রোধ ও মাড়ি শক্ত করে।
৭. কাটা জায়গায় গ্রিন টির লিকার লাগালে রক্ত পড়া
বন্ধ হয়।
আদা চাঃ
উপকরণ: পানি পরিমান্মত, এলাচি-খোসা ৪টা, থাই পাতা
২টা, আদাকুচি ১ টেবিল-চামচ, চিনি ৪-৫ চা-চামচ, মৌরি ১ চা-চামচ, দারচিনির গুঁড়া ১ চা-চামচ।
চা-পাতা ৩-৫ চা-চামচ।
প্রণালী: বড় পাত্রে ওপরের সব উপকরণ (চা-পাতা ছাড়া)
একসঙ্গে মিলিয়ে চুলায় দিয়ে ২-৩টা বলক তুলে নিতে হবে। এখন চা-পাতা দিয়ে নেড়ে আবার
২-৩টা বলক তুলে চুলা বন্ধ করে ঢেকে রাখতে হবে। পাঁচ মিনিট পর ছেঁকে গরম গরম পরিবেশন।
কেউ শখ করে খান আবার কারও অভ্যাস হয়ে গেছে আদা চায়ে।
কাজের ফাঁকে, কখনো আড্ডায় দেদার চলে চা পর্ব। পথের ধারে গজিয়ে ওঠা ঝুপড়ি ঘরগুলোতেও
অলস আর কর্মঠ মানুষ যখন চায়ের তৃষ্ণা মেটায়, তখন আদা চাকেই সঙ্গী করে। দুধ চায়ের
তুলনায় আদা চা খানিকটা সস্তা বলে এই চায়ের বিক্রিবাট্টাও বেশি। আবার কারও ঘরে আনেক
আয়োজনে যত্নে তৈরি করা হয় আদা চা। ঘরে কিংবা বাইরে শখ করে কিংবা অভ্যাসে যেমন করেই
খাওয়া হোক না কেন, এই আদা চা কিন্তু ভারি উপকারী। হাতে হাতে ফল পেতে বমি ভাব হলে চেখে
দেখতে পারেন আদা চা। বমি ভাব দূর হবে। সাধারণ সর্দি-কাশিতে ওষুধের বিকল্প হতে পারে
আদা চা। গলাব্যথায় ধোঁয়া ওঠা গরম আদা চা খান বিরতি দিয়ে। সেরে যাবে গলাব্যথা। আর
যাদের এসিডিটি আছে, নিয়ম করে দুই বেলা গাদা গাদা ওষুধ খাচ্ছেন। তাঁরাও মাঝেমধ্যে আদা
চা খেয়ে দেখতে পারেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এসিডিটির বিরুদ্ধে খুব ভালো লড়তে পারে
আদা চা। হজমের সমস্যা মেটাতেও সেই আদা চা। আর শুধু আদা চা পানে কারও যদি অরুচি থাকে,
তাহলে মিলিয়ে নিন খানিকটা লেবু। এবার ভালো লাগবেই।
চা পাতা মিশিয়ে পানি ফুটানো উচিত না তাতে চা পাতার
কার্যকারিতা কমে যায়।
চা সম্পর্কে ভুল ধারণাঃ
চা সম্পকে আমাদের অনেকের ভুল ধারণা আছে। চা খেলে রাতে
ঘুম আসেনা। চা লিভারের ক্ষতি করে। চা চামড়া কালো করে। এরকম অনেক ভুল ধারণা চা সম্পর্কে
শোনা যায়। যদিও চা খেলে গায়ের রঙ কাল হবে না। কারণ ত্বকের রঙ নির্ভর করে ম্যালানোসাইট
কোষের সক্রিয়তার উপর।চা কোনোভাবেই ম্যালানোসাইট ত্বকের চকচকে ভাবটা ধরে রাখার জন্য
চা পালন করতে পারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চা পান করলে লিভারের কোন ক্ষতি হয়না ।
তবে এখানে মনে রাখতে হবে অতিরুক্ত পানকরলে উল্টো ফল, যেমন রাতে ঘুম কম হওয়া । অবসাদ
আসতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। তবে চা খেতে হবে লাল চা এতে চা এর উপকারিতা
পাওয়া যাবে।
অনেক কিছু লিক্লাম,কিছু ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন।
Facebook Comments Plugin Bloggerized by BD WEBDESIGN
0 comments:
Post a Comment